রাজশাহীর বাগমারায় পুলিশ পাহারায় রাস্তার নির্মাণ কাজ

রাজশাহীর বাগমারায় পুলিশ পাহারায় রাস্তার নির্মাণ কাজ

আলিম সরদার বাগমারা প্রতিনিধি : অবশেষে পুলিশ পাহারায় রাজশাহীর বাগমারায় বড়বিহানালী ইউনিয়নের খালিশপুর থেকে আত্রাই উপজেলার পাইকাড়া পর্যন্ত এলজিইডি’র রাস্তার কার্পেটিং এর কাজ শুরু করেছে ঠিকাদার নাজমুল ইসলাম।

আজ সোমবার দুপুরে স্বরজমিনে রাস্তাটিতে গেলে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে। কাজের ঠিকাদার নাজমুল ইসলাম জানান, উপজেলা প্রশাসন ও এলজিইডি’র প্রকৌশলীর নির্দেশে পুলিশ পাহারায় রাস্তা কার্পেটিং এর কাজ আবারো শুরু করেছি।

গত গত শনিবার বিকেলে রাস্তায় কার্পেটিং কাজ করার সময় স্থানীয় আ’লীগ নেতা রেজাউল করিম রেজার নির্দেশে তার সমর্থক রুবেল হোসেন তার লাঠিয়াল বাহিনী নিয়ে শ্রমিকদের উপর হামলা চালিয়ে ২৫ জন শ্রমিককে আহত করে।

আহতদের মধ্যে সাইফুল ইসলাম ও ফরিদুল ইসলামকে আশংক জনক অবস্থায় বাগমারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে। শ্রমিক না থাকায় ঠিকাদার নাজমুল ইসলাম রাস্তার কাজ বন্ধ করে দেয়।

কিন্তু আ’লীগ নেতা রেজাউল করিম রেজা তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ঘটনার সাথে তার কোন সম্পৃক্তা নেই।উপজেলা এলজিইডি’র অফিস সূত্রে জানা যায়, বাগমারা উপজেলার বড়বিহানালী ইউনিয়নের খালিশপুর গ্রাম থেকে আত্রাই উপজেলার পাইকারা পর্যন্ত এলজিইডি’র রাস্তার কার্পেটিঙ্গের কাজ চলছিল।স্থানীয় আ’লীগ নেতা রেজাউল করিম রেজা কর্মী ইনতাজ আলী ছেলে রুবেল হোসেন (৩৫) বালু তোলা ইঞ্জিন চালিত শ্যালোর গাড়ী (কাঁকড়া) নিয়ে কার্পেটিঙ্গের কাজ চলা রাস্তা দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। শ্রমিকেরা রুবেল হোসেনকে একটু দাড়ানোর অনুরোধ করলে সে শ্রমিকদের সাথে বাকবিতান্ডায় জড়িয়ে পড়ে।

এক পর্যায়ে রুবেল হোসেন বিষয়টি স্থানীয় আ’লীগ নেতা রেজাউল করিম রেজাকে মুঠোফোনে জানালে তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছে শ্রমিকদের উপর হামলার নির্দেশ দেন। আ’লীগ নেতা রেজাউল করিম রেজার হুকুমেই রুবেল হোসেন তার লোকজন নিয়ে দেশীয় ধারালো অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে শ্রমিকদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে।

শ্রমিকেরা প্রান ভয়ে দিকবিদিক পালিয়ে যায় এবং পার্শ্বে বাবুল হোসেন নামের এক বাড়িতে আশ্রয় নেয়। সেখানে তারা হামলা চালিয়ে বাড়িঘরের দরজা ভেঙ্গে শ্রমিকদের বেধরক মারপিট শুরু করে।

খবর পেয়ে বাগমারা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পোঁছে আহত শ্রমিকদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।ঠিকাদার নাজমুল হোসেন অভিযোগ করেন, রাস্তার কাজ শুরুর পর পরই তারা শ্রমিকদের কাছে বিভিন্ন সময় চাঁদার দাবী করে। চাঁদাবাজরা আমার কাছে না এসে তারা শ্রমিকদের বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি দেখিয়েছে বলে তিনি স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান।

চাঁদাবাজদের চাঁদা না দেয়ায় শ্রমিকদের উপর এমন হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে ঠিকাদার নাজমুল হোসেন জানিয়েছেন। বিষয়টি জানার পর পরই স্থানীয় সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল ওই সকল চাঁদাবাজদের শক্ত হাতে দমনের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বাগমারা থানার পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন। ওই ঘটনায় এখনো থানায় কোন মামলা হয়নি বলে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা এলজিইডি’র প্রকৌশলী সানোয়ার হোসেন বলেন, শ্রমিকদের উপর হামলার ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য, এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও অফিসার ইনচার্জকে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে।রাস্তার কার্পেটিং কাজে পুলিশ পাহারায় বিষয়টি স্বীকার করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকিউল ইসলাম বলেন, শ্রমিকদের উপর হামলার ঘটনায় থানায় একটি এজাহার দেয়া হয়েছে।

পুলিশ জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন।অপর দিকে বাগমারা থানার ওসি আতাউর রহমান জানান, রাস্তার ঘটনায় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ হয়েছ্ ে। পুলিশ ঘটনার বিষয়টি তদন্ত শুরু করে অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন বলে তিনি জানিয়েছেন।

মতিহার বার্তা ডট কম ২৪ জুন ২০১৯

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply